শিক্ষাক্রমে নতুন পরিবর্তনের প্রতিফলন: শিক্ষার মুখোমুখি চ্যালেঞ্জ এবং সমাধান
নতুন শিক্ষাক্রমের ষান্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়ন শুরু হয়েছে ৩ জুন থেকে। এটি পরীক্ষার প্রচলিত ধারণা পুরোপুরি বদলে দিয়েছে।
মূল্যায়নের প্রক্রিয়া: মূল্যায়নের আগের দিন, নৈপুণ্য (https://master.noipunno.gov.bd) ওয়েবসাইটের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠান প্রধানদের কাছে প্রশ্ন পাঠানো হয়। সার্ভার জটিলতা এড়াতে শিখনকালীন (ধারাবাহিক) মূল্যায়ন ঐ সময় বন্ধ রাখা হয়।
শিক্ষক অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের প্রতিক্রিয়া: শিক্ষার্থীরা প্রশ্ন পেয়ে আনন্দিত। তারা আলোচনার মাধ্যমে নিজেদের চিন্তাভাবনা দিয়ে উত্তর খুঁজে বের করছে। যেখানে প্রশ্ন বুঝতে অসুবিধা হচ্ছে, শিক্ষকরা তা ব্যাখ্যা করে দিচ্ছেন। এ প্রক্রিয়ায় কোনো প্রেশার বা তারাহুরো নেই। পাঁচ ঘণ্টার মধ্যে শিক্ষার্থীরা নিজেদের সৃজনশীল চিন্তা ও মেধা দিয়ে চমৎকার কাজ করছে। একক, জোড়ায় এবং দলীয় কাজের সংমিশ্রণে প্রশ্নগুলো দেওয়া হয়েছে। ষষ্ঠ শ্রেণির বাংলা প্রশ্ন উদাহরণ হিসেবে দেওয়া হলো। তবে এই কারিকুলামের রূপরেখা নিয়ে অনেক আলোচনা ও সমালোচনা চলছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমনভাবে ছড়িয়ে পড়েছে যে, অভিভাবকরা যেমন বিষয়টি নিয়ে চিন্তিত, তেমনি শিক্ষকরাও খানিকটা দ্বিধা-দ্বন্দ্বে রয়েছেন। ফলে এর বিরূপ প্রভাবগুলো শিক্ষার্থীদের উপর বিরুপ প্রভাব পড়ছে বেশ প্রকটভাবে।
কারিকুলামের প্রভাব: যারা মনে করেছিলেন বই মুখস্থ করেই পার পাওয়া যাবে, তাদের নতুন করে ভাবতে হবে। শিক্ষার্থীরা এখন আর গাইডের উপর নির্ভরশীল থাকবেনা। মুল্যায়ন প্রশ্ন দেখলে বুঝতে পারবেন যে, খুবই সৃজনশীল চিন্তাধারার প্রয়োগ হয়েছে কিছু নমুনা প্রশ্ন দেওয়া হলো নিচে। শিক্ষার্থীরা নতুন সিস্টেমের মাধ্যমে সত্যিই শিখছে। সিস্টেম যত গভীরভাবে জানবেন, ততই এর সুদূরপ্রসারী ফলাফল বুঝতে পারবেন। জীবনমুখী শিক্ষা সত্যিই অসাধারণ।
প্রশ্নপত্র ফাঁস: তবে, কিছু ব্যতিক্রম রয়েছে। কিছু ইউটিউবার আগের দিন রাতেই প্রশ্নপত্র ও সমাধান শেয়ার করছেন, যেমন:
- Happy Learning School & College (অষ্টম শ্রেণির জীবন ও জীবিকার প্রশ্ন ও সমাধান): ভিডিও
- Arfat Academy (সপ্তম শ্রেণির ইসলাম বিষয়ের প্রশ্ন ও সমাধান): ভিডিও
এতে শিক্ষার্থীরা আগেই সমাধান পেয়ে যাচ্ছে, যা তাদের চিন্তাভাবনার বিকাশে বাঁধা সৃষ্টি করছে। যদিও প্রশ্নগুলো মানসম্মত, যুগোপযোগী ও বাস্তবমুখী ছিল, শিক্ষার্থীদের মাথা খাটিয়ে কাজ করা প্রয়োজন।
মোবাইল ব্যবহার ও সতর্কতা: ছবিতে দেখা যাচ্ছে, শিক্ষার্থীরা মোবাইল ব্যবহার করে লিখছে, যা তাদের বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশে বাধা সৃষ্টি করছে। মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) এ বিষয়ে সতর্কতা নোটিশ জারি করেছে। প্রধান শিক্ষকগণকে সতর্কতার সঙ্গে মূল্যায়নের প্রশ্ন ডাউনলোড করতে বলা হয়েছে।
নজরদারি ও সার্ভার জটিলতা: প্রশ্নফাঁস রোধে কঠোর নজরদারি বাড়ানো উচিত। নৈপুণ্য অ্যাপের সার্ভার জটিলতার কারণে মূল্যায়নে সমস্যা হচ্ছে। অনেক শিখনকালীন মূল্যায়ন আন্দাজে করা হচ্ছে, যা সঠিক মূল্যায়নের পথে বাধা সৃষ্টি করছে।